অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নওগাঁর রাণীনগর ও বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সীমানায় অবস্থিত ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল। বিলের আশেপাশে ৪০টি গ্রামের মানুষের বসবাস। এই মানুষদের চলাচলের একমাত্র ভরসা মেঠোপথের শেষে খেয়াঘাটের নৌকা। হাজার চেষ্টাতে এই অঞ্চলের মানুষদের ভাগ্যে একটি ব্রিজ জোটেনি। আর এতে করে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষ।
বোদলা গ্রামের বাসিন্দা মো. সাইদুর রহমান মুহরী জানান, বিলের পূর্বপাশে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কৃষি প্রধান অঞ্চল বোদলা, পালশা, কৃষ্ণপুর, তেবাড়িয়াসহ ৪০টি গ্রাম অবস্থিত। এই মানুষদের সহজেই নওগাঁ, বগুড়া, রাণীনগর, আদমদীঘি, সান্তাহারে চলাচলের সহজপথ হচ্ছে বিলের মধ্যদিয়ে রাস্তা। কিন্তু বিলের ব্রিজ না হওয়ার কারণে মেঠোপথ দিয়েই খেয়াঘাটে পারাপার হতে হয়। পারাপারের জন্য খেয়াঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় নৌকার জন্য। এই অঞ্চলের মানুষদের হাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় হাতে বেশি নিয়ে অন্যত্র যেতে হয়।
তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থী ও রোগীদের। এছাড়া সহজেই নিজেদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে না পারার কারণে নায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে এই অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক।
তেবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বাদশা বলেন, এই বিলের একপ্রান্তে শতবছরের ঐতিহাসিক কোসমুড়ির দরগা রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন মানত পূরণ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে থাকে। এছাড়াও বর্ষাকালে এই বিলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে অনেক দর্শনার্থীরা এসে থাকেন। তাই এই ঘাটে একটি ব্রিজ জরুরি। ফলে এখানে অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।
নওগাঁ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমার জানা মতে ব্রিজ নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। সকল বিভাগীয় প্রক্রিয়া শেষে অর্থ বরাদ্দ পেলেই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। আমি আশাবাদী অতিদ্রুতই এই অঞ্চলের মানুষদের শতবছরের স্বপ্নের ব্রিজ নির্মাণের সুখবর দ্রুতই পাওয়া যাবে।
নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, চীনের হুয়াংহু নদীর মতো এই রক্তবিলও এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি দুঃখ। এই ঘাটে একটি ব্রিজ এই অঞ্চলটিকে আমুল বদলে দিতে পারে। আমিও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে একাধিকবার ব্রিজ নির্মাণের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাগাদা দিয়েছি। দ্রুত একটি আধুনিকমানের ব্রিজ নির্মাণের সুখবর পাওয়া যাবে।
Leave a Reply